পরিবার ও বাস্তবতা
একটা
সময় ছিল
যখন আমরা
পরিবার বলতে
বুঝতাম মা-বাবা, ভাই-বোন,
দাদ-দাদী,
চাচা-চাচী,
ভাবি-দুলাভাই
সবাই একসাথে
বসবাস করা। সেই পরিবারটিকে আমরা বলতাম
যৌথ পরিবার
বা একান্নবর্তী
পরিবার। এই পরিবারের
কোন এক
সদস্যের কোন
প্রকার বিপদ-আপদ হলে
পরিবারের সকল
সদস্যই তার
মোকাবেলা করত। কোন
একটি অনুষ্ঠান
হলে সকলেই
একত্রে বসে
পরিকল্পনা করত
যে, কিভাবে অনুষ্ঠানটি
সুন্দর করে
করা যায়। একেক
জন একেক
কাজের দায়িত্ব
নিত বা
তাদের মাঝে
কাজ ভাগ
করে দেওয়া
হত এবং
সকলেই তাদের
কাজ হাসি
মুখে সুন্দর
ভাবে সম্পন্ন
করত। কেউ যদি
কোন দায়িত্ব
না পেত,
তবে তার
রাগারাগি শুরু
করে দিত। তাই
বাধ্য হয়েই
পরিবারের ছোট
থেকে বয়স্ক
পর্যন্ত সকলকেই
কোন না
কোন কাজে
দায়িত্ব দিতে
হত।
কথায় বলে “যেখানে কাজের সম্ভাবনা, সেখানেই অলসতার সৃষ্টি”।
এই অলসতা
থেকে দায়িত্বে
অবহেলার সৃষ্টি
হয় আর
এই অবহেলা
থেকেই ঝগড়ার
সৃষ্টি। যার ফলস্রুতিতে পরিবার থেকে
দূরে সরে
যাবার প্রবনতা
তৈরি হয়। আর
এর ফলাফল
আমরা দেখতে
পাই আমাদের
বর্তমান যুগের
পরিবারগুলোতে। যেখানে শুধুমাত্র
স্বামি-স্ত্রী
আর তাদের
ছেলে-মেয়েরা
ছাড়া আর
কোন লোকজনকে দেখতে
পাওয়া যায়
না।
একটা প্রবাদ বাক্য আছে “অধিক সন্নাষীতে গাজন নষ্ট”।
এর মানে
হল যেখানে
অনেক লোকজন,
সেখানে ভাল
কিছু হতে
পারে না। যেহেতু
সকলের মতামত
নিয়ে কাজ
সঠিক ভাবে
করা যায়
না তাই
একক ভাবেই
সিদ্ধান্ত নিয়ে
কাজ করতে
হয়। যার জন্য
তৈরি হচ্ছে
একক পরিবার
যেখানে একজনের
মতের উপর
ভিত্তি করেই
চলছে একটি
পরিবার।
যখন
মানুষ একত্রে
বসবাস করত
তখন যেমন
সবাই শান্তিতে
থাকত, তেমনি এখনও
একক ভাবে
বসবাস করে
শান্তিতেই থাকছে। প্রশ্ন
উঠতে পারে,
তাহলে সমস্যাটা
হল কোথায়?
আসলে সমস্যা
হল মানবতা
আর বাস্তবতার। মানুষের
প্রতি মানুষের
মায়া-মমতা, স্নেহ, ভালবাসা এখন
আর আগের
মত নেই। সবাই
আমরা আমাদের
নিয়েই ব্যস্ত
থাকতে পছন্দ
করি অন্যের
কোন বিষয়
নিয়ে চিন্তা
করার সময়
আমাদের হাতে
নেই। আর তাই
বাবা জানেনা
তার সন্তান
কোথায় আছে
কেমন আছে,
এক ভাই
জানেনা আরেক
ভাই কোথায়
কি করছে,
ভাই জানেনা
বোন কি
করছে, বোন জানেনা
ভাইরা কি
করছে।
বাস্তবতা
আমাদেরকে আমাদের
প্রয়োজনের দিকে
ঠেলছে, শুধু সামনের
দিকে যেতে
বলছে। পেছনের দিকে
ফিরে তাকানোর
কোন সুযোগ
নেই, কে পেছনে
পরে রইল
তার দিকে তাকানোর কোন সময়
আমাদের হাতে
নেই। পেছনে কি
হয়েছে, কে কার
জন্য কি
করেছে তা
এখন আর
দেখার কোন
প্রয়োজন নেই। আর
তাই আমরা
স্বাভাবিক ভাবেই
একক চিন্তায়
সমনের দিকে
ছুটতে পারছি। তাই
বাবা-মা
কে দেখার
কোন প্রয়োজন
পরে না,
ছোট ভাই-বোনদের নিয়ে
চিন্তা করার
দরকার নেই,
আত্মীয়-সজনদের
সাথে সম্পর্ক
বজায় রাখার
কোন মানেই
নেই। শুধু আছে
সমাজে নিজেকে
একটি উচ্চ
পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত
করে তোলার
চাহিদা।
বাস্তবতা এখন আমাদেরকে এগুলো মানিয়ে নিতে শিখিয়েছে। বাস্তবতার জন্যই মানুষ বিভিন্ন প্রবাদ বাক্য, প্রচলিত কথার সৃষ্টি করতে পেরেছে। আর এই বাস্তবতাই মানুষকে বাস্তবতার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখিয়েছে। যেখানে কেউ কারোর প্রতি কোন প্রকার দোশারোপ করার সুযোগ পায়না।
1 comment:
That is so nice
Post a Comment